রাজশাহীতে অসময়ে পদ্মার পানি বাড়ছে। চরের জমিতে রোপণ করা পেঁয়াজ, আখ, কপি ও টমেটোখেত ডুবে যাচ্ছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে আজ সোমবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত দুই সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছিল ১০ সেন্টিমিটার।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, আজ সকাল ছয়টায় রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মার পানি ১৬ দশমিক ৪০ মিটার উচ্চতায় উঠেছে। আগের দিন রোববার দুপুর ১২টায় এই পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৩৭ মিটার। এ মৌসুমে সর্বোচ্চ পানি বেড়েছিল ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর। এ দুই দিনে রাজশাহী পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার। তারপর পানি কমতে থাকে। ১৮ সেপ্টেম্বর পানি কমে আসে ১৪ দশমিক ৮৭ মিটারে। এর পর থেকে আবার পানি বাড়তে থাকে। গতকাল দুপুরে রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মার পানি ১৬ দশমিক ৩৭ সেন্টিমিটারে ওঠে। দুপুর তিনটাতেও পানির উচ্চতা একই ছিল। সন্ধ্যা ছয়টায় হয়েছিল ১৬ দশমিক ৩৮ মিটার। আর আজ সকাল ছয়টায় হয়েছে ১৬ দশমিক ৪০ মিটার।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার এনামুল হক বলেন, দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় তাঁরা দেখেছেন যে সাধারণত অক্টোবর মাসের শেষ পর্যন্ত পদ্মায় পানি বাড়ার প্রবণতা থাকে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কয়েক বছর ধরে নভেম্বরেও পানি বাড়ছে। উজানে বন্যা না হলে বাংলাদেশে বন্যার আশঙ্কা নেই। তবে চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসলের ক্ষতি হতে পারে। ইতিমধ্যে জেলার বাঘার চর প্লাবিত হয়েছে।
জেলার বাঘা উপজেলার সুলতানপুরে গিয়ে দেখা যায়, চাষি মোস্তফা আলী খেতের পাশে দাঁড়িয়ে হাহাকার করছেন। তাঁর ২০ বিঘা জমিতে রোপণ করা পেঁয়াজ তলিয়ে গেছে। একই জমিতে পেঁয়াজের সঙ্গে আখও রোপণ করা হয়েছিল। তিনি পানি হাতড়ে রোপণ করা পেঁয়াজ তুলে দেখালেন ইতিমধ্যে তাতে শিকড় গজিয়েছে।
উপজেলার কলিগ্রামের চাষি আসাফুদ্দৌলা বলেন, রোববার সারা দিন বাঘার চরে পানি বেড়েছে। আর এক দিন পানি বাড়লে তাঁর পাঁচ বিঘা জমির পেঁয়াজ ডুবে যাবে। উপজেলার মর্শিদপুর চরে এক বিঘা জমিতে কপি লাগিয়েছেন চাষি কামরুল ইসলাম। তাঁর টমেটোখেত ডুবে গেছে।
বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সফিউল্লাহ সুলতান বলেন, বাঘার চরের জমির পরিমাণ ৬ হাজার ৩০ হেক্টর। তার মধ্যে আবাদি জমির পরিমাণ ৫ হাজার ৫৬০ হেক্টর। চরের জমি খুবই উর্বর। সব জমিতেই চমৎকার সবজি হয়। পানি আরেকটু বাড়লে সর্বনাশ হয়ে যাবে।